সুনামগঞ্জ , মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫ , ২৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদ বিক্ষোভে উত্তাল সুনামগঞ্জ গাজার ৫০% ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে, সংকুচিত হয়ে পড়ছে ফিলিস্তিনিরা মার্চে ৪৪২ নারী নির্যাতনের শিকার, ধর্ষণ ১৬৩ ছয় দেশকে গুরুতর পরিণতির বিষয়ে সতর্ক করলো ইরান সিলেটে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির লাশ উদ্ধার মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধা নিহত হত্যা মামলায় জামিনে এসে বাদীকে হত্যার হুমকি জামালগঞ্জে বৌলাই নদীতে নৌকা ডুবে নিহত ৪, আহত ১ জামালগঞ্জে দূর্নীতির অভিযোগে সদর ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন বরখাস্ত অর্ধযুগ পর পরিবারের সঙ্গে ঈদ করবেন খালেদা জিয়া “এমন ভূমিকম্প গত ২০ বছরে দেখা যায়নি মিয়ানমারে” ডিসিদের প্রতি ১২ নির্দেশনা প্রধান উপদেষ্টার বিএনপি নেতা কামরুলের উদ্যোগে ইফতার মাহফিলে তৃণমূল নেতাকর্মীদের জোয়ার ‘জয় বাংলা’ স্লোগান কারও দলের নয় : কাদের সিদ্দিকী সয়াবিন তেল লিটারে ১৮ টাকা বাড়াতে চান ব্যবসায়ীরা জুলাই যোদ্ধাদের আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ পণাতীর্থে লাখো মানুষের পুণ্য স্নান শান্তিগঞ্জ-ডুংরিয়া সড়ক নির্মাণকাজের তথ্য নিয়ে লুকোচুরি স্বাধীনতার সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে হবে : জেলা প্রশাসক

পথে যেতে যেতে

  • আপলোড সময় : ০৮-০৪-২০২৫ ০১:৪১:৩৯ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৮-০৪-২০২৫ ০১:৪২:৩৪ পূর্বাহ্ন
পথে যেতে যেতে
পথচারী::
ছোটবেলায় কাউকে বোকা বানিয়ে মজা হতো। বিশেষ করে ১ এপ্রিল দিনটি এলে আমরা এমন মজা করতাম। ভাবী, দুলাভাই, বেয়াই-বেয়াইন, শ্যালক-শ্যালিকা, বন্ধু-বান্ধব এমন আত্মীয়দের সাথে ধোকা দেওয়া খেলতাম, বেশ মজা হতো। যেমন- একটি ঢাকনা দেওয়া শূন্য বাটি দিয়ে বলতাম এতে মিষ্টি বা খাবার জাতীয় কিছু আছে। ঢাকনা উল্টিয়ে যখন দেখা হতো তা খালি তখন খুব মজা হতো। এই ধোকা ধোকা খেলা যে কত নিষ্ঠুর, কতো মর্মান্তিক তা বোধগম্য ছিল না। অনেক বছর পরে যখন বুঝলাম ‘এপ্রিল ফুল’-এর মর্মার্থ তখন নিজেই বোকা হয়ে যেতাম। আমরা ‘এপ্রিল ফুল’ মানে বুঝতাম এপ্রিল মাসের ফুল, বুঝতাম কাউকে বোকা বানানো। কিন্তু আসলে তা মোটেও ঠিক নয়। বাংলায় ফুল মানে ফ্লাওয়ার (ঋষড়বিৎ) তা যথার্থ। এ ফুল সেই ফুল নয়। এই ফুল ইংরেজিতে ঋড়ড়ষ অর্থাৎ বোকা। ঋষড়বিৎ মানে ফুল একটি প্রাকৃতিক জিনিস, সুঘ্রাণযুক্ত একটি গুল্মলতা যুক্ত ফুল। আর ঋড়ড়ষ মানে বোকা। এই ঋড়ড়ষ - ফুল-এর একটি ইতিহাস আছে যা খুবই মর্মান্তিক। ইতিহাসের নিরিখে ফিরে যেতে হয় ১৪৯২ সালের দিকে। তখন স্পেনে ইউরোপীয় ইহুদী খ্রিস্টানরা একত্রিত হয়ে ইসলাম ধর্ম ও মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করতে বিভিন্ন ফন্দি আটে। এক প্রকার যুদ্ধ-বিগ্রহ আরম্ভ করে। মুসলমান সম্প্রদায় কখনও বিজয়ী হয়, আবার কখনো পরাজিত হয়। এভাবে চলতে থাকা অবস্থায় মুসলমানরা যখন অসহায় ও বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়ে তখন পর্তুগিজ রাণী ইসাবেলা ও স্পেনের পার্শ্ববর্তী রাজ্যের প্রধান সেনাপতি ফার্দিনান্দ কৌশল অবলম্বন করে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। উদ্দেশ্য মুসলমানদের ধ্বংস করা। তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে নানা প্রকার ফন্দির চিন্তা-ভাবনা করে কিভাবে মুসলমানদের ধ্বংস করা যায়। একবার তারা ঘোষণা করে যে, মুসলমানরা যদি স্পেনের রাজধানীর প্রবেশদ্বার খুলে সেখানে তাদের মসজিদে আশ্রয় নেয় তাহলে তাদেরকে মুক্তি দিয়ে দিবে। মুসলমানরা ইসাবেলা ও ফার্দিনান্দের এই যৌথ ঘোষণাকে বিশ্বাস করে এবং মসজিদে আশ্রয় নেয়। সেই ফার্দিনান্দ ও ইসাবেলা ইতিহাসের চরম বিশ্বাসঘাতকতা করে মুসলমানদের সাথে। তাদের প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসে। চরম প্রতারণার শিকার হয় মুসলমানরা। যে মসজিদে আশ্রয় নিয়েছিল মুসলমানরা, বিশ্বাসঘাতক ইসাবেলা ও ফার্দিনান্দ সেই মসজিদের চারপাশে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে মসজিদটি সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে যায়, আর সাথে সাথে এর ভেতরে থাকা ইসলামধর্মী মানুষগুলোও। পুড়ে যাওয়া মুসলমানদের সংখ্যা কত হবে তা সেদিন অনুমান করা যায়নি। সেদিন ইসাবেলা ও ফার্দিনান্দ বিজয় উল্লাস করেছিল। দিনটি ছিল এপ্রিল মাসের ১ তারিখ। তারা ‘এপ্রিল মাসের বোকা’ বানিয়েছিল সেদিন। পরের বছর থেকে তারা দিনটিকে ‘এপ্রিল ফুল’ হিসেবে পালন করে। ইহুদী খ্রিস্টানরা আজও দিনটিকে পালন করছে ‘এপ্রিল ফুল’ হিসেবে। অথচ অনেকেই তার প্রকৃত ইতিহাস না জেনে এভাবেই দিনটি পালন করে আসছে। বিষয়টি কত নির্মম, কত নিষ্ঠুর মুসলমান সমাজের জন্য। অথচ অনেকে তা পালন করে এই না জেনে। বিষয়টি শুধু মুসলমানদের জন্যই নয়, তা পুরো মানবতার জন্যও কলঙ্কজনক। পৃথিবীর মানুষ আজও দিনটির কথা স্মরণ রেখেছে। আজকের যুগে এ বিষয়টি নিয়ে হাসি-তামাশা করা উচিত নয়। কারণ আমরা যেহেতু বিষয়টির বাস্তব ইতিহাস জেনে গেছি। না জেনেই এক সময় বিষয়টি নিয়ে হাসি-তামাশা করেছি। হতে পারে তা শিশু-কিশোরদের জন্য হাসি-তামাশা, কিন্তু মানবতার দৃষ্টিতে তা জঘন্য অপরাধ। তখন হয়তো মিডিয়ার তেমন প্রচার ছিল না। এখন যেমন আমরা প্রযুক্তির যুগে বসবাস করছি। ইলেকট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়ার পাশাপাশি বর্তমানে ইন্টারনেট যেমন জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। এখন আমরা উপভোগ করছি ফেসবুক, ইউটিউব, ম্যাসেঞ্জার, হোয়াটসআপ ইত্যাদি। কোথাও সামান্য কিছু ঘটনা ঘটলেও ছড়িয়ে যায় সারাদেশে - সারা বিশ্বে। রাণী ইসাবেলা ও ফার্দিনান্দের সেই নির্মম ও নিষ্ঠুর ঘটনাটি এখন ঘটলে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়তো সারা বিশ্বে। নিরীহ মুসলমানরা সেদিন বিশ্বাস করে পবিত্রঘর মসজিদে আশ্রয় নিলেও তাদের জীবন রক্ষা হয়নি। পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে আজও এমন ঘটনা ঘটে চলেছে। এমন অমানবিক ঘটনার নিন্দা জানাই।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স